সকাল সংগ্রহ
১.
নিজের
পাখিটির পাশে বসো
যতদূর
সুসকাল খুলে দেওয়া যায়
যতটা
আহার ফিরিয়ে দেয় মাটি
শরীরে
আবহমান বেজে উঠছে
আমি
রোদের কঙ্কণ কুড়োতে
নেমে
আসছি মেঘের টেবিল থেকে
প্রাচীন
স্তূপ ফসলের আবেগ ধরে রাখতে পারছে না
লতাপাতা
থেকে ঝরে পড়ছে হাঁসের পালক
ওই
হাল্কা ইমেজ আমি গ্লাসে ঢেলে রাখি, বরফার্থ মেশাই
ওহ
দেখো কবির আত্মা ছড়িয়ে যাচ্ছে, আয়ত
হচ্ছে
লাঙলের
কঠিনে উঠছে নরম ভোর
২.
মনে
করো চাঁদের দাঁতে লেগে আছে চিঠির শেষাংশ
তুমি
অতল দিয়ে ধুয়ে দাও ওষ্ঠের ঘনঘোর
দূরে
গানের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে কচি ঘাস
একটা
ফাঁকা মাঠে নিসর্গ তৈরি হচ্ছে
ক্ষুদে
অজ যখনই ছুটে যাচ্ছে তীব্র বোঁটার সন্নিধানে
গাছের
রাধা জুড়ে চমৎকার বিজুরি
ধরা
যাক গল্প রান্নার জন্য আমরা গোল হয়ে বসেছি
থালায়
নুয়ে পড়ছে পাকা পাকা আনন্দ
নানা
প্রজাতির মানুষ আজ নেমে আসছে রাস্তায়
শুরু
হয়েছে পারস্পরিক চিঠি বিনিময়
দুঃখেরা
আজ শিশুর হাত ধরে পেরিয়ে যাচ্ছে ধানজমি
৩.
সারারাত
ঘুমের আয়নায় বৃষ্টি ঝরেছে
এখন
খুলে যাচ্ছে ভোরের উদ্ভিদ
রোদের
ডিম ফেটে বেরিয়ে আসছে ফকিরের গান
আজানের
ফুল ফুটছে
বাচ্চারা
কুলোকুচি করে ধুয়ে ফেললো বাসি চাঁদ
বিষন্ন
পিঁপড়েরা মাটির খিল খুলে খাদ্যের দিনলিপি
নিল হাতে
আর
আমরা যারা রাতের নাবিক
জাল
ফেলে মধুরকে তুলে এনেছি দুঃখের টোপ দিয়ে
বাদামি বালিতে ঘুমিয়ে পড়ছি
দূরের
গ্রামগুলো হাসি আর কান্না দিয়ে ধুয়ে দিচ্ছে তাদের রান্নাঘর
বহুকাল
খায়নি যে মানুষ
তার আজ হাত পাততে ইচ্ছে করছে কবিতার সামনে
৪.
গাছের
সকাল বেজে উঠেছে
আর
মায়েরা
বিলি করছে অনাড়ম্বর মেঘ
গৃহস্থের
শ্যামবর্ণে পুঁতে দিচ্ছে পিতার লণ্ঠন
অরণ্যের
অনুবাদ করবে বলে চিরুনি হাতে
বেড়িয়ে
গেছে সুপ্রাচীন যুবকেরা
তারা
দেখছে মাঠকে মাঠ ছড়িয়ে আছে
মনুষ্যফুলের
গান
একদিন
এই সংবাদ বৃক্ষ হবে
হাত
রাখবে পাখিদের জাহাজে
দেখো
ফকিরের জামা পরে এসেছে এই সকাল
ওকে
শরীর দাও, মধুময় তামরস
মানুষের
প্রার্থনার পাশে ও ভরা নদী হয়ে ফিরে আসুক
৫.
এসো
মেয়েদের স্বভাব নিয়ে আলাপ করি
কীভাবে
স্তন থেকে বেরিয়ে এল ধানের চারা
আর
পাখিরা
হাওয়ায় ভরে নিয়ে এল বৃষ্টির জামবাটি
তুমি
তোমার অলীক খুলে হয়ে উঠলে কবিতা সিরিজ
কেউ
কেউ বেঁচে থাকার জন্য দুঃখ জমায় মাটিতে
গাছে
গাছে ঢেলে দেয় তীর্থযাত্রীর অশ্রু
তাদের
সকালসমগ্রে চাঁদের ঝিনুক ফুটে থাকে
রোদের
মুখে লেগে থাকা শিশুটিকে দেখে কেঁদে ফেলে
সামান্য মানুষ
মনুষ্যফুল,পাখির জাহাজ
ReplyDeleteগতরাতেই একটা আবদার করেছিলাম।আবদার পূরণের প্রথম ধাপ যেন এই কবিতাগুলি পড়ানোই।খুব নরম গন্ধ মাখা কবিতা।
বেশ বললি।। আরে এই যে নরম গন্ধমাখা রূপ তা কিন্তু পেখমের সৌজন্যে।। আয় কথা হবে বিকেলে
Deleteখুব ভালো লাগল। আরও লেখো এরকম।
ReplyDeleteচেষ্টা করবো গো
Deleteছবির গঠনে অনুভবকে এভাবে দানা করে তোলা। এবং ধীরে তাকে সমগ্রেে ধরে রাখা। এই নির্মাণ আরো জল পাক। ডানা পাক। শুভেচ্ছা।
ReplyDeleteআন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ReplyDeleteপ্রতিটি কবিতাই পাঠককে কিছুক্ষণ আটকে রাখে , তারপর ভাবায়। ভালো লাগল
ReplyDeleteআন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন। আমার লেখা যদি আপনাকে আনন্দ দেয়, ভাবায় তার থেকে বড় পাওনা আর কী হতে পারে
Deleteভালো লাগলো
ReplyDeleteধন্যবাদদাদা
Deleteখুব ভালো লেখা দাদা। ৫ নং-টি ফাটাফাটি। ক্যায়া বাত!
ReplyDeleteআরে ক্যায়া বাত... তোমার ভালো লাগলো জেনে আমারও আনন্দ হচ্ছে
Deleteখুব ভালো লাগল কবিতাগুলো
ReplyDeleteআন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
Deleteপ্রতিটি কবিতায় অসাধারণ লীরিকাল আবেদন। দুই তিনবার পড়লাম। মোহগ্রস্ত লাগছে। শ্রদ্ধা জানাই....
ReplyDeleteআপনিও আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন। খুব ভালো লাগলো আপনি পড়েছেন জেনে
Deleteভালো লাগলো লেখাগুলি। গভীর আবেদন আছে এর। কিছু শব্দবন্ধ, বাক্যবন্ধ অন্য মাত্রা আনে, কবিতা করে। 'বরফার্থ' 'সকালসমগ্র' এমন দু একটা শব্দবন্ধ অবশ্য অব্যর্থ লাগেনি।
ReplyDeleteধন্যবাদ রাহেবুল।। আপনার মতামত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবো জানবেন
Deleteকচি ধানগাছের ঋজু উচ্চারণ পেলাম
ReplyDeleteআপনি পড়েছেন দেখে কী যে আনন্দ হচ্ছে । আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ReplyDeleteচমৎকার লেখা।
ReplyDeleteতুমি বললে আমার আত্মবিশ্বাস বহুগুণ হয়ে যায়
Deleteদুর্দান্ত দাদা
ReplyDeleteধন্যবাদ জানবেন
Deleteখুব ভালো লাগল দাদা!
ReplyDeleteখুব খুশি হলাম গো
DeleteThis comment has been removed by the author.
Deleteআপনার এই কবিতাগুচ্ছ অসামান্য বললেও কম বলা হয়। সহজ এবং নির্ভার। আর প্রতিটি কবিতায় আছে অপ্রত্যাশিত শব্দ ব্যবহার। এটা কবিতায় আপনার মৌলিক অবদান। এমন গভীর দেখার দৃষ্টি পাই বলেই আপনার কবিতা একধরনের স্নিগ্ধ আশ্রয়। আপনি শুধু আমার প্রিয় কবিই নন, আপনি অনিবার্য। আন্তরিক শুভেচ্ছা।
ReplyDeleteপঙ্কজবাবু আপনি আমার অর্জন । আপনি যতক্ষণ না কিছু বলছেন যেন অপূর্ণ থেকে যায় আমার লেখারা।। আপনার কথাকে গভীর ভাবে অবলোকন করে নিজের লেখাদের বলি এই ভালোবাসা আর সম্মানের যোগ্য থেকো সর্বদা।। সবচেয়ে ভালো লাগে আমার লেখার মৌলিকত্বকে আপনি সবচেয়ে দৃঢ ভাবে চিহ্নিত করেন । মৌলিক হতে চাওয়াই যে আমাদের সকলের অভীষ্ট আর আপনি বললে মনে হয় কিছু লেখা হয়ত থেকে গেলেও যেতে পারে।। ধন্যবাদ জানবেন।। শ্রদ্ধাও
Deleteআপনার কবিতা গুলো গাছ আর ধানের যত কাছাকাছি, মানুষও যদি তেমন হতো।
ReplyDeleteআমি যদি সুযোগ পাই প্রীতম আবার ফিরে যাই ছেলেবেলার দিনগুলোতে, যখন আমি অধিকাংশ সময় কাটাতাম ওই গাছ ধান আর গ্রামীন জনগোষ্ঠীর মধ্যে
Deleteকী অসাধারণ সব শব্দ। গান হয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে যেন।
ReplyDeleteআন্তরিক ধন্যবাদ শীর্ষা
Delete