বাক্‌ ১৪২ ।। রিগ্যান এসকান্দার



সাপলুডু

দুপুর। আমি আর সুফিয়াখালা লুডু খেলতে বসি। সুফিয়াখালার বয়স ৩৫, আর আমার ১৫। প্রথমেই আমার চাল। আমি গুটি চালি। মই দিয়ে আট ঘর উঠে আসি আমি। সুফিয়াখালার ৩৫, আমার ২৩। এবার সুফিয়াখালার পালা। সুফিয়াখালা গুটি চালে। সুফিয়াখালাকে সাপে খায়। পাঁচ ঘর নেমে আসে সে। তার বয়স নেমে আসে ত্রিশে। 

আবার আমার পালা। আমি এবার দুই ঘর মইয়ে উঠি। এবার আমার বয়স দাঁড়ায় পঁচিশ। এদিকে সুফিয়াখালা সাপের ভয়ে ইসপিস। সুফিয়াখালার দান। আয়াতাল কুরসি পড়ে চাল দেয় সুফিয়াখালা। আবার তাকে সাপে কাটে। আবারও পাঁচ ঘর নেমে আসে সে। এখন সুফিয়াখাল ২৫, আমিও ২৫। পরপর দুবার সাপে কাটা কিছুতেই মেনে নিতে পারে না সুফিয়াখালা। রেগেমেগে খেলা ফেলে উঠে যায় সে।

শুধু একটি সমবয়সী সাপ লুডুর পাশে বসে থাকে সারাটি দুপুরজুড়ে।





মই

খুব গরমের রাতে আকাশে মই ভিড়িয়ে সূর্যটা পেড়ে আনি আমি।  পেড়ে এনে বাড়ির পুকুরে চুবিয়ে রাখি কিছুক্ষণ। পুরোপুরি ঠান্ডা হলে সুফিয়াখালা পুকুর থেকে সূর্যপ্লেটটা তুলে আনে। সূর্যপ্লেটে ভাত বেড়ে আমাকে দেয়। তারপর ভোজনপর্ব শেষ হলে সুফিয়াখালা বলে, যা সূর্যটা যেখানে ছিল, রেখে আয়। 

আমি সূর্যটা বগলে নিয়ে পুকুরপাড়ে আসি। আকাশের দিকে তাকাই। সূর্যটা আকাশে রাখার জন্য আমাদের সেই মইটা খুঁজি, পাই নাকো আর। কারণ, ঘটনাটা সত্য হলেও মইটা ছিল কল্পনার।

পরদিন সূর্য আবার গরম হতে শুরু করে। আর আমি আস্ত সূর্যটা হাতে নিয়ে পুকুরপাড়ে ধীরে ধীরে গলে যাই।





পূর্ণিমা

চাঁদ সূর্যের কাছে ধার করে খায়। 

চাঁদ যে কদিন ধার করে খায়
সে কদিন পূর্ণিমা।
চাঁদ সে কদিন ধার শোধ দেয় 
সে কদিন অমাবস্যা। 

আমরা পূর্ণিমা ভালোবাসি। 

মূলত আমরা অভাবি বলে-
আমরা আরেক ঋণগ্রস্ত চাঁদের প্রশংসা করি।

আমাদের অভাবের আরেক নাম পূর্ণিমা।




3 comments:

  1. সবকটিই চমৎকার লাগলো! ❤️

    ReplyDelete
  2. ভালো।

    ReplyDelete
  3. অভিনব রিগ্যান... জয়তু

    ReplyDelete