বাক্‌ ১৪২ ।। হিমাদ্রি চৌধুরী



মাছদের নিরব শরীর

বিনয় পড়তে পড়তে একদল উজ্জ্বল মাছ ডুবে গ্যালো দৃশ্যের অতলে
বস্তুত হাঙর ভরা সমুদ্র যোনী এক দাতাল  সৌরজগত 
উনুনে চালের আগেই সেদ্ধ হয় ঘাম ইদানীং 
হাপ ছেড়ে দিয়ে মিউচুয়াল খোঁপার কাঁটায় ফেরার শব্দবন্ধ 
কাঁপিয়ে তোলা প্লাস্টিকে মোড়া আঙুল শিখেনি রক্তের রঙ
ঘরের ভিতর ঘর হতে গ্যালে পাখি সাধনার প্রয়োজন 
হিম এই বরফ প্রহর লাল লংকার ঝোল পূর্ণ সানকি ভর্তি মৃত অনুভব 
আকাঙ্খার ইমারত বিমান চূর্ণ বায়ুবাহী উড়াল হতে চায় রোজ
সভ্যতার সাপ পেঁচিয়ে ধরে ছায়া-মানবের জ্যামিতিক উত্তরণ
এক অলৌকিক বসন্তের যক্ষ্মা-রোদে শুকাতে থাকা মদিরার গ্লাসে ভেসে উঠে মাছদের নিরব শরীর।


মাকালফল

দিন বদলায়।বদলায় পাথর কিংবা রঙ।অক্ষয় তবুও থাকে জিকির ঝিকিমিকি পথ জুড়ে তামাটে ফুলের মতোন।আজব এক মৈথুনে লাভা উড়ে।নিষিক্ত কদমে হারানো বর্ষণের মুখস্ত সমাবেশ।কিছু কীট হাসে, কিছু রুমাল জমা করে ঘাম।

খক খক শব্দে কাশির সিরাপ কাশে, মানুষ কাশির আয়ুর মতো গুটিয়ে আসে জন্মরেখায়।চৈতন্য গোল্ডফ্লকের ঠোঁটে ভাসিয়ে দ্যায় হাসি।বেদম যাতনার বেধড়ক বৃত্ত ত্রিশূল ডগায় সূর্যফল ঘূর্ণিয়মান এই রঙ্গশলার বিব্রত সামিয়ানায়।

জিরাফ যেমন গলা বাড়িয়ে আকাশ দেখে নৈঃশব্দ্যে 
তার চোখে  বহুদূর ওই নীলিমানীলবৃক্ষের লোভনীয় পাতা।আমাদের চোখের অবসরেও কিছু আকাশ ধরা দেয়,ধরা দেয় মিল্কিওয়ের ঐশ্বর্য্যের গালিচা সরবে আমাদের কাছে তা মূলত মাকালফল।


করাতকল

নাকের ডগায় শীত এঁকে গ্যালো এই ভয়ানক গ্রীষ্মের  প্রকোপ।বৃষ্টির দেখা নাই।ঘনঘোর মেঘে গুড়গুড় রেল ইঞ্জিনে চলমান সুবিশাল সুনশান-নিস্তব্ধতা।একরাশ ধুলো চোখের কোণে বসে আছে, ক্রন্দনহীন মরুপথে বেদুঈন পথ ভুল যায়।হুল তোলা ক্যাকটাস য্যানো দারুণ ফুল মরীচিকাময় এই যাত্রায় পৃথিবীতে নোঙর করা জাহাজী কেবল রঙিন  ফানুসের মায়ায় ফ্যালে রাখে (অ)সজাগ প্রেক্ষাগৃহ।

পৃথিবী এক খাপখোলা দু'ধারি করাতকল, প্রয়োজন শ্যাষে কেটে নেয় (সু)বোধ কিংবা শত্রুফল।


ত্রাতা

কবিতার প্রসঙ্গে এলে কবিতা রচয়িতা কথা উঠে আসে য্যানো বরশীর টোপে লিখা ছিলো এক/আধ টা কবি উঠে আসুক অসুর টেবিলে।মহৎ যেকোনো কবিতার দেহে থাকে মৃন্ময়ী যৌবন, উত্তাল ফেনিল জলরাশি। পরিচয়ে প্রয়োজন হয়না জাত/পাত/সঙ্গমরাশির।পাতাজুড়ে কিছু রত্নখচিত লাইন জীবিত গোলাবারুদের চেয়ে ভয়াবহ , গোলাবজল/ কস্তুরি/লোবানের চেয়েও উল্লাসিত সুবাসতীর আজও বিদ্ধ কোরে দ্যায় মগজ কিঙবা পথ। আমাদের কোলাজ ভর্তি রবিঠাকুর, নজরুল, জীবনানন্দ, বিষ্ণু দে, বিনয়, শক্তি, আল-মাহমুদ।এখনো হাভাতের মতো আমাদের চেতনা ডুবিয়ে রাখি ওইসব  মদে রেল হয়ে ছুটি, উড়ালপথে ঘুরি, হামিংয়ের সুর রপ্ত কোরতে কোরতে মার্বেল হয়ে গড়াগড়ি খাই।

এককাপ চায়ে বদল হয়ে যায় ঘুড়ি।ফরমায়েশি রঙের কনডমে মুড়িয়ে দিয়ে এখনকার অক্ষর আত্মহত্যায় শিল্প খোঁজে আচ্ছা বাংলা কবিতা কী মরে যাচ্ছে? 

কবিতা এড়াতে এড়াতে একদিন জিপারে শিশ্ন আটকে যাবার অনুভব নিয়ে ক্যাঁক করে উঠবে  ক্রমশ এলিট হতে থাকা  ব্যাংঙাচি বেলুন দল ত্রানহীন এই রুদ্ধ চরে সেদিনও কবিতা-ই বাড়িয়ে দিবে গেলাস ভর্তি শান্তিজল।


সংবাদ 
.

ছলাৎ শব্দে ভাঙছে নদীর শরীর ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে কুয়াশায় মোড়ানো দিগন্ত। ও'ধারে বিস্তীর্ণ পাড় সবুজ শাড়ি পড়া কিশোরীর ডাগর ভ্রুর হরিণক্ষেত্র এক।

ভাসে লৌহ জাত জাহাজ, কাঠ নৌকার দল।অদ্ভুত আওয়াজে মাঝেমধ্যে বাজছে সাইরেন, সরে যাচ্ছে গাঙশালিক, কচুরিপানার সংসার (য্যানো) আয়োজন করে  মাস্তুলে দাঁড়িয়ে থাকা সারেং পৌঁছে দিচ্ছে সংবাদ দ্রুত প্রস্তুত হও ঘর, বিছানায় সাজাও সিঁদুরে আলাপন...

4 comments:

  1. সবকটি ভাল লাগল

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভালোবাসা জানবেন সুহৃদ 💚

      __হিমাদ্রী চৌধুরী

      Delete
  2. ভালো লাগল। বিশেষ করে মাছদের নিরব শরীর এবং মাকালফল

    ReplyDelete
    Replies
    1. আপনি ভালোবাসা জানুন,সুহৃদ💚

      Delete