এবং
আসবাবপত্রের কবিতা
'হোমার মানুষকে এঁকেছেন মানুষের চেয়ে
মহত্তর করে, ক্লিওফন এঁকেছেন স্বাভাবিক, হেগেমন এবং নিকোকারেস এঁকেছেন হেয়তর করে।'
মহত্তরও হোক কিংবা হেয়তর মূলত যা নয়
তাই আঁকছে ভাঁড়গুলা। দীর্গদিন
পর দেখি, ইঁদুরের বাচ্চাগুলা 'পয়েটিক্স' খেয়ে ক্ষুধারে হারাইতেছে। গুড়াগুড়া কাগজ দেখে দুঃখ হইতেছে। নিজের জন্যে আর এরিস্টটলের জন্যে।
এরি' আমার বন্ধ। বন্ধুর এমন গুড়া হইয়া পড়ে থাকা আমার দুঃখের
অর্গাজম বাড়াইতেছে। ইন্দুরগুলারে কইলাম— আয়, আমি এক
জটিল জরাগ্রস্থ সময়, আমার 'পরে হেগেমেগে তুদের গুষ্টি উদ্ধার কর৷ টিভিসিতে দেখলাম;
অসম্ভবরে সম্ভব করা অনন্ত জলিলের কাম। এখন আমি গুঁড়াদুধের মতোন এই কাগজগুলা নিয়ে জলিলের কাছে যাবো? যেন সে
জোড়াতালি দিয়া আমার বন্ধুরে বানায় দেয়?এই ফাঁকে লোরকা সমস্ত কবিতা চুরি কইরা ভেঁউ
ভেঁউ কইরা কাঁদতেছে। এইটা কইতেই
নিৎসে ভক্তরা হাইসা দিছে আর লোরকা ভক্তরা মন খারাপ করে আমার কবরের উপর লাথি
দিতাছে৷
চেয়ার
চেয়ার। বোটানিক্যাল ফিগার৷ বন থেকে চুরি
হয়ে যাওয়া কান্না। এখানে ছিলো। আমাদের ভীড়ে। সবাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। চেয়ারটা দেখেছে। ঘরে ফিরে হাতলে হাত রাখতেই নিজের
কান্না শুনছি। হাতলে ছিলো রক্ত। পায়াতে ঘ্রাণ পিষ্ট হচ্ছে; যাকে
পিশা হয়েছে তার৷ দ্রুতসময় কান্না আত্মস্থ করছে বাতাসের৷ অন্যরুমে যাইতে যাইতে
ভাবতেছি; দীর্ঘদিন চেয়ারের লগে থাকতে থাকতে মানুষগুলা চেয়ার হইছে নাকি চেয়ারটা
মানুষ?
দরোজা
আমাদের ঘরের কোন দারোয়ান ছিলোনা। দরজা ছিলো একটা। কেউ চাইলেই ঘরে ঢুকতে পারতোনা; সে
বাঁধা দিতো। গৃহিণীর অনুমতি নিয়েই ঘরে ঢুকাইতো।
পরিবারের সবার কাছে একমাত্র বিশ্বস্ত দারোয়ানটা পুড়ে যাওয়ার পর আমরা
অনেকদিন কিছুই খেতে পারি নি। কেউ কেউ কেঁদেওছিলাম।
অন্য একটা ঘর, অন্য একটা দরোজা
পাওয়ার পর সব ভুলে গেছিলাম। কিচ্ছুটি মনে ছিলোনা। শেষ বৃহষ্পতিবার সে স্বপ্নে এসে খুব করে চাইছিলো তারে চিনাইতে৷ আমি
চিনিনাই৷ বরং অপ্রাসঙ্গিক শব্দ বলে কবিতার লাইন থেকে কেটে দিয়া ঘুমাইতে গেছিলাম।
খাট
একটা নিষ্প্রাণ খাটের জন্যে গদগদকথার
কিচ্ছুটি নাই। 'ঘনান্তে ফকফকা আকাশের মতো সুন্দর
সময়' এইটা লিখে খাটের মুখ আছে প্রমাণ করতে চাইছিলাম নিজের মূর্খ আত্মার কাছে৷
প্রুফ রিডারের কাছে পাঠাইতে ইচ্ছে করেনা। তারা বানান ভুলের নাম করে কবিতার মগজ তুলে নেয়। আমার কষ্ট হয় ভেঙে যাওয়া খাটের
জন্যে। 'রেঙ্গুন গাছের ফুল হয়?' জিগ্যেস
করতেই খাটটা কয়েকবার কেঁপে উঠে। 'ম্যাজিকের মতো'। ফুল? অনন্য
কান্না; কোন শোরগোল নাই; হাসির মতো শব্দদূষণ নাই। একটা নদীর পানির বয়ে যাওয়ার মতো
অশাব্দিক দুঃখ আছে কেবল; কেবল আছে শান্তির অনুবাদ।
No comments:
Post a Comment