বাক্‌ ১৪২ ।। উম্মে হাবীবা



ক্ষুধার অসুখ

 পাহাড় কখনও বলে না সে ক্ষুধার্ত 
তবু মানুষ বারবার ভুলে যায় 
পৃথিবী শকুনের শুশ্রূষায় সেরে ওঠে

আলো হাতে উঠে আসা বণিক শ্রেণীর 
একমাত্র উদ্দেশ্য পাহাড় সওদা করা নয়
তারা ক্ষুধা নামক অসুখ ছড়াতে চেয়েছে

দাঙ্গায় ধনীকে গরীবের শত্রু বানিয়ে
পাহাড়ের হাতেও ধরিয়ে দিয়েছে থালা
পাহাড় কখনও বলেনি আমি ক্ষুধার্ত।




তরুণ মৃত্যু 

জিভের তলায় মৃত্যু নিয়ে ঘুরছি
পাহাড় তোমাকে জাপটে ধরে চুমু খাবো
খুউব চুমু খাবো তোমার সবুজে অবুঝে
এই হাড় হাভাতে দেশে কিছু মানুষ
না খেতে পেয়ে চিরকালই মরবে
এটা স্বাভাবিক স্রোতের ঘটনা

চুমুর চুমুকে আমরা ভিন্ন গল্প লিখবো
নক্ষত্রপুঞ্জে সওয়ার হয়ে তেইশ আসমান
চষে ফিরে তোমার চূড়ান্ত চূড়ায় উঠে 
ঝাঁপিয়ে পড়বো প্রকাশ্য অতলান্তে

পাহাড় তোমাকে চুমু খাবো খুউব 
জাপটে ধরে মুখের ভেতর পুরে দেবো
লকলকে তরুণ মৃত্যু 
জিভের অগ্রভাগে বিক্রি হয়ে যাওয়া 
আয়ু নিয়ে ঘুরছি
তোমাকে মৃত্যু দেখাবো চুমু খেতে খেতে।




প্রতারক

তোমার ওয়ালেটে 
প্রাক্তন প্রেমিকাদের স্তন কেটে রেখেছো

ঠোঁট হাতড়ে ফেরা চুমু 
গরাদ ভেঙে বেরিয়ে পড়লে স্বীকার করো 
তোমারও ছিলো বহুগামিতার চর্চা
শরীরে শরীর ঘেঁষার নামতা পড়িয়ে
যে দু'পয়সা রোজগার করতে
তাতে বাবার ওষুধ কেনা হতো না

উচ্চবিত্তের শহর তোমার প্রেমকে 
ন্যাংটো করে ছেড়ে দিয়েছে
প্রতিবাদ করো তীব্র নিন্দা জানাও
আর নয় লজ্জিত হও 
মাথায় পেরেক ঠুকে ব্যানার টানাও
লাল রঙে লিখে দাও
তুমি কারো প্রেমিক নয় প্রতারক।।




লাথি মারুন

বরং লাথি মারুন আমার মুখে
যদি পুনরায় বলি পাহাড় ভালোবাসি
রঙ ধরে আসা ধানের শীষ 
গোগ্রাসে খেয়ে গ্যাছে জংলী হাতি 
খিদে পেলে খেতে হয় পাহাড়ই শেখায় ওদের
আমারও তো পেটে পিঠে খিদের খামার 
দোজখের চেয়ে খর উত্তাপে পোড়ায়
কাউকে মা ডেকে বলি না
খিদে পেয়েছে দুটো ভাত দেবেন খাবো

রিফিউজি ক্যাম্পের উচ্ছিষ্ট ঘেঁটে 
হাড্ডিতে লেগে থাকা শুকনো মাংস
আঁচলের আড়াল টেনে চিবিয়ে জল খাই
পাহাড় দূর থেকে দেখে ধ্বসে পড়ে
যাহোক একটা সম্পর্কতো ছিলো আমাদের
সেটা অস্বীকার করে নিজেই নিজের মুখে
সজোরে লাথি মারছি 
পারলে আপনারাও দু' চারটে মারুন।।


No comments:

Post a Comment