বাক্‌ ১৪২ ।। সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়



ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া লকডাউন


প্রস্তাবনা

যেদিকে খুসি সেখানে যাক চোখ
যে পথে চায় হাঁটুক দুটি হাত
ফোঁটা ফোঁটায় অশণিসম্পাত
আপাদমাথা জাগ্রত উৎপাত



বলগাধারী

যদিও দেশে প্রকৃত খরা নেই
মাটির গায়ে শ্রমের দাস হাঁটে
আমার ঘরে সেসব ঢেউ মৃদু
এ শমশের নিপুণ ধারে কাটে




মাটিময়

যদিও দেশে বৃষ্টি সমীচিন
যদিও শিস উঠছে বিষ ছেপে
তোমার মাথা আমার মাথা ক্ষীণ
আয় রে ঋতু, প্রহর দিই মেপে

মাংসে পোড়া রণভূমির বালি
উড়েছে বহু, দিন অনেকই গেছে
তোমার দেশে প্রকৃত খরা নেই
ওষুধে তার আরোগ্য সামলেছে

আজন্ম বাঁক অন্ধগতি আলো
জন্মপারে কোথায় ছিলো ধক?
ছায়ার পর ছায়ায় কাঁপে কায়া
মারণ ব্যাধি আজকে প্রকাশক




ভেলা

হে নির্বাণ, ধুলোয় ঢাকা ভূমি
প্রাগিতিহাসে মলিন হলে তুমি
রে নির্বাণ, জ্বর হয়েছে তোর?
সভ্যতাতে লেগেছে ব্যাধিঘোর?



জনমানুষ

দূরে বসত৷ অন্য দূরে বাড়ি
চালাচ্ছে পথ, অন্য উপায় নাই
তোমার বাড়ি তালির ঘোরে কালা
তোমার ঘরে অগণ্য রোশনাই
এথায় জীবন পথ দিয়েছে মেপে
বাচ্চা কাঁদে, জল কুথাকে পাই
তোমার বাড়ি জল দিয়েছে বিধি
তোমার ঘরে অশ্লীল রোশনাই

ঘাতক অনেক, মালিক পাপোষ পোঁছে
ফড়ের পকেট আধেক টাকা খায়
ওভারটাইম শরীর লোহার ঘানি
বিষবৃক্ষে জল যুগিয়ে যায়

দূরের পথে আত্মা জড়ামড়ি
যেতেই হবে ছেড়ে দূরের খাঁচা
আপৎকালে বিভুঁইয়ে কে মরে?
আপন মাটি জড়িয়ে রেখে বাঁচা

পৌঁছে যাবোই, পৌঁছে যাবোই, জানি
আবিশ্বকাল চলাই থেকে যায়
যেতেই হবে৷ পথেও যদি মরি
ঘাতক যেন তাই দেখে কাতরায়

ঘাতক যেন তাই দেখে কাতরায়

4 comments:

  1. মমত্ববোধ থেকেই লেখাগুলো উঠে এসেছে। 'রুদ'-এর রুদ্র থেকেও। তাই কিভাবে লেখা হল তারচেয়ে কবির অন্তর বয়ে গেল কোনদিকে, সেটাই লেখাগুলো থেকে পাওয়ার ঘন আবেগটিকে সেলাম।

    ReplyDelete
  2. ইয়া আল্লা।আগেই বলেছিলাম ভালো হইছে।
    শিরোনামে ভাগ করতে জমে গেল।

    ReplyDelete
  3. অর্ঘ্য দত্ত30 May 2020 at 23:28

    খুব ভালো লাগলো। বলগাধারী, ভেলা দারুণ।

    ReplyDelete